র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি কি | ধারণা, সূত্র, সুবিধা ও অসুবিধা | Spearman Rank Difference Method

শিক্ষাক্ষেত্রে দুটি চলের মধ্যে সহগতির সহগাঙ্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি বা সারি পার্থক্য পদ্ধতি (Spearman Rank Difference Method) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সহগতির সহগাঙ্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি বা সারি পার্থক্য পদ্ধতি (Rank Difference Method) একটি জনপ্রিয় ও কার্যকর পদ্ধতি। যখন ডাটা ক্রম বা র‍্যাংকের ভিত্তিতে থাকে, তখন এই পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি উপযোগী। এটি Spearman’s Rank Correlation Coefficient নামেও পরিচিত।

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির ধারণা | Concept of Rank Difference Method

র‍্যাংক বা সারি পার্থক্য পদ্ধতিএমন একটি পরিসংখ্যানগত কৌশল যা দুটি চল বা চলকদ্বয়ের ক্রমানুসারে অবস্থান (Rank) নির্ণয় করে তাদের মধ্যে সহগতির মাত্রা নির্ধারণ করে।

র‍্যাঙ্ক পার্থক্য পদ্ধতির জনক হলেন স্পিয়ারম্যান (Charles Edward Spearman)। স্পিয়ারম্যান ১৯০৪ সালে “The proof and measurement of association between two things” শীর্ষক গবেষণাপত্রে প্রথম এই পদ্ধতি প্রকাশ করেন।

এটি পিয়ারসনের (Pearson)-এর Product Moment Correlation এর একটি বিকল্প রূপ। বিশেষ করে, যখন ডেটা ব্যাপ্তিসূচক স্কেল (Interval Scale) বা আনুপাতিক স্কেলে (Ratio Scale) না হয়ে ক্রমসূচক স্কেল (Ordinal Scale)-এ থাকে।‍

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতিতে সংখ্যাগত মানের পরিবর্তে র‍্যাংক বা ক্রম ব্যবহার করে দুটি চলকের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা হয়। যদি ডাটা অনির্দেশ্য বা অসম সংখ্যা হয়, তবে এই পদ্ধতিতে সেগুলিকে র‍্যাংক দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়।

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির সূত্র| Formula of Rank Difference Method

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির সুবিধা | Advantages of Rank Difference Method

স্পিয়ারম্যানের র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির দ্বারা সহজে দুটি চলের মধ্যে কি ধরনের সম্পর্ক রয়েছে তা নির্ণয় করা যায়, এই পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা গুলি হল –

সহজ ও সরল পদ্ধতি (Simple Method)

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি খুব সহজে গণনা ও প্রয়োগ করা যায়। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে গণিতের জটিলতা কম, তাই শিক্ষার্থী ও গবেষকরা সহজেই ব্যবহার করতে পারেন।

Ordinal Data-র বা ক্রমসূচক তথ্যের জন্য উপযুক্ত (Suitable for Ordinal Data)

সংখ্যাগত মান ছাড়া শুধুমাত্র ক্রম বা অবস্থানগত ডাটার মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ে এই পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর। অর্থাৎ বিশেষ করে যেখানে আসল সংখ্যা পাওয়া কঠিন, সেখানে এটি বিশেষভাবে উপযোগী।

Outlier বা Extreme Value-র প্রভাব কম (Less Sensitive to Outliers)

এই পদ্ধতিতে ডাটার মধ্যকার ব্যতিক্রমী বড় বা ছোট মান (Extreme Values) সহগাঙ্কের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে না, যা ফলাফলকে স্থিতিশীল রাখে। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে সহগতির মান অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য হয়ে থাকে।

Non-Parametric Test (Distribution Free)

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতিতে ডাটার স্বাভাবিক বন্টন (Normal Distribution) থাকার প্রয়োজন নেই। তাই এটি Non-Parametric Test হিসেবে কাজ করে। তাই এটি স্বাভাবিক না হলেও সহ গতির মান নির্ণয় করা যায়।

ছোট Sample Size-এও কার্যকর (Effective in Small Samples)

এখানে স্বল্পসংখ্যক ডাটা বা ছোট স্যাম্পল সাইজেও এই পদ্ধতি ফলপ্রসূ। অর্থাৎ অন্যান্য পদ্ধতিতে যেখানে বড় স্যাম্পল দরকার, এখানে তা প্রয়োজন হয় না। তাই খুব কম নমুনা বা স্যাম্পেল -এর ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক সহজে নির্ণয় করা যায়।

দিক নির্দেশনা দেয় (Direction of Relationship)

এই পদ্ধতিতে বোঝা যায় দুটি চলকের মধ্যে সম্পর্ক ধনাত্মক না ঋণাত্মক, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক। অর্থাৎ এটি গবেষককে বা শিক্ষককে দুটি চলকের মধ্যে কি ধরনের সম্পর্ক রয়েছে তা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে।

র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির অসুবিধা | Disadvantages of Rank Difference Method

SLST Education, NET, WB SET, CTET, Primary TET বা অন্যান্য পরীক্ষার উপযোগী প্রশ্নোত্তর

Q. র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির প্রবর্তক কে?

A) Karl Pearson
B) Charles Spearman
C) Ronald Fisher
D) Francis Galton

Show Answer
B) Charles Spearman

📌 ব্যাখ্যা: Charles Edward Spearman ১৯০৪ সালে র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি প্রবর্তন করেন।

Q. Spearman’s Rank Correlation Coefficient এর প্রতীক কী?

A) rr
B) r²
C) ρ
D) s

Show Answer
C) ρ

📌 ব্যাখ্যা: Spearman’s Rank Correlation Coefficient কে ‘ρ’ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

Q. Spearman’s Rank Correlation এর সর্বোচ্চ মান কত হতে পারে?

A) 0
B) +1 to -1
C) -1
D) 100

Show Answer
B) +1 to -1

📌 ব্যাখ্যা: +1 মানে সম্পূর্ণ ধনাত্মক সম্পর্ক, আর -1 মানে সম্পূর্ণ ঋণাত্মক সম্পর্ক।

Q. র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি সাধারণত কোন ধরনের ডাটার জন্য উপযুক্ত?

A) Ratio Data
B) Ordinal Data
C) Nominal Data
D) Continuous Data

Show Answer
B) Ordinal Data

📌 ব্যাখ্যা: র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি মূলত Ordinal বা ক্রমসূচক ডাটা বা র‍্যাংক ভিত্তিক ডাটার জন্য প্রযোজ্য।

Q. র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির মূল সুবিধা কী?

A) খুব জটিল হিসাব
B) Outlier এর প্রভাব কম
C) সবসময় সংখ্যা ব্যবহার লাগে
D) শুধুমাত্র Linear সম্পর্কের জন্য

Show Answer
B) Outlier এর প্রভাব কম

📌 ব্যাখ্যা: এই পদ্ধতিতে অত্যধিক বড় বা ছোট মান (Extreme value) সহগাঙ্ককে তেমনভাবে প্রভাবিত করে না।

Q. Spearman’s Rank Correlation এর সূত্রে N কী নির্দেশ করে?

A) গড় মান
B) চলকের সংখ্যা
C) মোট র‍্যাংক সংখ্যা
D) পার্থক্যের সংখ্যা

Show Answer
C) মোট র‍্যাংক সংখ্যা

📌 ব্যাখ্যা: N দ্বারা মোট র‍্যাংক সংখ্যা বোঝানো হয়, যা সূত্রের গুণিতক অংশে ব্যবহৃত হয়।

Q. র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির সূত্রে D কী বোঝায়?

A) দুই র‍্যাংকের যোগফল
B) দুই র‍্যাংকের গুণফল
C) দুই র‍্যাংকের পার্থক্য
D) দুই চলকের গড়

Show Answer
C) দুই র‍্যাংকের পার্থক্য

📌 ব্যাখ্যা: D = দুই চলকের র‍্যাংকের পার্থক্য, যা বর্গ করে সূত্রে বসানো হয়।

তথ্যসূত্র | Reference

  • Garrett, H. E. (1981). Statistics in Psychology and Education (6th ed.). Vakils, Feffer and Simons Pvt. Ltd.
  • Best, J. W., & Kahn, J. V. (2014). Research in Education (10th ed.). Pearson Education India.
  • Ferguson, G. A. (1981). Statistical Analysis in Psychology and Education (6th ed.). McGraw-Hill.
  • Singh, A. K. (2016). Tests, Measurements and Research Methods in Behavioural Sciences (6th ed.). Bharti Bhawan Publishers.
  • Koul, L. (2018). Methodology of Educational Research (5th ed.). Vikas Publishing House.
  • Spearman Rank Difference Method

প্রশ্ন – র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির প্রবর্তক কে?

উত্তর – র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন স্পিয়ারম্যান (Charles Edward Spearman)।

1 thought on “র‍্যাংক পার্থক্য পদ্ধতি কি | ধারণা, সূত্র, সুবিধা ও অসুবিধা | Spearman Rank Difference Method”

Leave a Comment